রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ করা ভালো। রোগ হলে রোগীর কষ্ট হয়। চিকিৎসা করাতে হয়, ওষুধ খাওয়াতে হয়, অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। আমাদের দেশে আ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, কবিরাজি, হেকিমিসহ যত ওষুধ তৈরি হয় এর অধিকাংশ ওষুধ শাকসবজি ফলমূল ভেষজ উদ্ভিদ, খাদ্য দ্রব্যসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস থেকে তৈরি হয়। রাসায়নিক প্রায় সব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায়। কিন্তু ফুলফল, শাকসবজি, ভেষজ উদ্ভিদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকর প্রভাব নেই। ওষুধ না খেয়ে সুনিদিষ্ট পরিমাণ ফল, শাকসবজি, খাদ্যদ্রব্য খেয়ে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা যায় ও রোগ সারানো যায়। এজন্য কোনো খাদ্য খেলে কোন রোগ প্রতিরোধ হয় ও সারায় এবং পুষ্টি পাওয়া যায় তা আমাদের সবার জানা একান্ত প্রয়োজন। এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মদ রোগ প্রতিরোধে খাদ্য ও পুষ্টি বইতে বিশ্লেষণ করেছেন সহজ সরল ভাষায়।
বইতে ৫৪টি শাকসবজির পুষ্টিমাণ ও রোগ প্রতিরোধ গুণ, ৩৫টি ফলের পুষ্টিমাণ ও রোগপ্রতিরোধ গুণ, ১০টি মশলার পুষ্টিমাণ ও রোগপ্রতিরোধ গুণ, ৩৫টি ভেষজ উদ্ভিদের রোগ সারানোর গুণ, ৩৩টি বিভিন্ন খাদ্যের পুষ্টিগুণসহ খাদ্য পুষ্টি বিষয়ক বিশ্লেষণ আছে। বইটিতে রোগ প্রতিরোধে শাকসবজি, রোগ প্রতিরোধে ফল, রোগ প্রতিরোধে মশলা, রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন খাদ্য এবং পুষ্টি তথ্য সংবলিত মোট ৫টি ভিন্ন অধ্যায় আছে। বিভিন্ন তথ্য, গবেষণা ফলাফল, বিভিন্ন বার্তার মাধ্যমে লেখক সুন্দরভাবে পুষ্টিতথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। কোন ফসলে কী কী পুষ্টিগুণ, কী পরিমাণ আছে এবং তা কী কাজে লাগে তা উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া বন্যার্তদের জন্য পুষ্টি বার্তা, অসুস্থদের জন্য পুষ্টিবার্তা, রোগীদের জন্য পুষ্টিবার্তা, আমাদের চলমান অভ্যাসগত খাদ্যোপাদানের মধ্যে কী খেলে কী লাভ হয়, কী ক্ষতি হয় সেগুলোও বিশ্লেষণ করেছেন। বিষমুক্ত উৎপাদন, পরিবেশবান্ধব উৎপাদনেও জোর দিয়েছেন। শেষ অধ্যায়ে পুষ্টি বার্তায় রোগীদের খাদ্য তালিকা, দামি ও সস্তা খাবার, দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা, বিভিন্ন খাদ্যে পুষ্টি উপাদান, রোগ নিরাময়ে ভেষজ গাছ, কোন কাজে কত ক্যালরি দরকার, পুষ্টি উপাদানের ওপর রান্নার প্রভাব, পুষ্টি বজায় রেখে রান্নার কৌশল বর্ণনা করেছেন। আশা করি বইটি স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সচেতন মানুষ, পুষ্টিবিদ, পুষ্টি গবেষক, পুষ্টি শিক্ষার্থী, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের বিশেষ উপকারে আসবে। বইটিতে মোট পৃষ্ঠা ২০০। দাম ৩০০ টাকা। ঝকঝকে ছাপা, বাইন্ডিংসহ বইটি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
প্রকাশক দি রয়েল পাবলিশার্স, ৩৬ বাংলাবাজার, দোতলা, ঢাকা-১১০০। লেখকের কাছ থেকেও সুলভ মূল্যে পাওয়া যাবে। কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মদের সেল নাম্বার ০১৭১১৯৫৪১৪৩। তাছাড়া খামারবাড়ির কৃষি তথ্য সার্ভিসের বিক্রয় কেন্দ্রেও বইটি পাওয়া যাবে।
(কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মদের আরেকটি বই)
মো. আমিনুল ইসলাম*
*স্ক্রিপ্ট রাইটার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫